অ্যাজমা বা হাঁপানিতে অনেকে ভুগলেও এ বিষয়ে সচেতনতা তেমন নয়। অনেক রোগীই সাধারণ শ্বাসকষ্ট ভেবে হাঁপানি সম্পর্কিত সচেতনতা গ্রহণ করে না। কিন্তু যেকোনো রোগের ক্ষেত্রেই শুরুতেই রোগ শনাক্ত করাটা যথাযথ চিকিৎসার জন্য জরুরি। পাশাপাশি রোগের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কেও ধারণা থাকাটা জরুরি।
এ জন্য হাঁপানি রোগের লক্ষণগুলো জেনে রাখাটা ভীষণভাবে দরকার। বিশেষত শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে হাঁপানি এমনকি প্রাণসংহারি হয়ে উঠতে পারে।
অ্যাজমা বা হাঁপানি কেন হয়
মূলত শ্বাসনালীতে প্রদাহের কারণে অ্যাজমা বা হাঁপানি হয়। অ্যাজমা অ্যান্ড অ্যালার্জি ফাউন্ডেশন অব আমেরিকা জানাচ্ছে, মূলত তিনটি কারণে অ্যাজমা বা হাঁপানি হতে পারে—
শ্বাসনালীর ভেতরে ফুলে গেলে। এটা মূলত প্রদাহের কারণে হয়।
অতিরিক্ত পরিমাণে শ্লেষ্মা জমা হলে
শ্বাসনালীর পেশি শক্ত ও সংকুচিত হয়ে গেলে
ওপরে বর্ণিত এই ঘটনাগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেক কারণে হতে পারে। অনেকেরই নানা ধরনের খাবারে অ্যালার্জি আছে। সেই ধরনের খাবার খেলে কারও কারও শ্বাসনালীর ভেতরে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। শ্বাসনালী স্বাভাবিকের চেয়ে কম বাতাস গ্রহণ করতে পারলেই শ্বাসজনিত কষ্ট হয়। আর এটি দীর্ঘমেয়াদি ও প্রকট হলে তাকে অ্যাজমা বা হাঁপানি হিসেবে চিহ্নিত করেন চিকিৎসকেরা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে বায়ুদূষণ, পশু, পাখির পশম বা ধুলাবালি কিংবা সূক্ষ্ম তন্তুর সংস্পর্শে এলে অনেকের অ্যাজমার সংকট হয়। আবার অনেকের চিংড়ি, ইলিশ মাছ, বেগুন বা এমন নানা খাবারের কারণে, অনেকের আবার ফুলের রেনুর সংস্পর্শে এলেও অ্যাজমা সংকট হয়।
অ্যাজমা বা হাঁপানির লক্ষণ
অ্যাজমা অ্যান্ড অ্যালার্জি ফাউন্ডেশন অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে হাঁপানির প্রধান লক্ষণগুলোর উল্লেখ আছে। চলুন নেওয়া যাক কী সেই লক্ষণ—
শ্বাসের সময় বাতাস টানতে না পারা
কফ হওয়া
বুক শক্ত হয়ে আসা বা ব্যাথা হওয়া
শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া
শ্বাসকষ্টের কারণে রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া
শ্বাস স্বাভাবিকের চেয়ে ধীরে বা দ্রুত হওয়া
তবে সবার মধ্যে একই লক্ষণ প্রকাশ পায় না। রোগীভেদে একেকজনের মধ্যে ওপরে বর্ণিত লক্ষণগুলোর একেকটি বা একাধিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে শ্বাসকষ্ট হওয়া মানেই কিন্তু অ্যাজমা বা হাঁপানি নয়। এই লক্ষণগুলো দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। নিশ্চিত হোন অ্যাজমা বা হাঁপানির সমস্যা রয়েছে কিনা। থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করুন।